অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা ও আত্মদানের ভেতর দিয়ে জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ। এখন চলছে তার নির্মাণের পর্ব। এই নির্মাণকে সত্যিকারভাবে অর্থময় করার জন্যে আজ এদেশে চাই অনেক সম্পন্ন মানুষ সেইসব মানুষ যারা উচ্চ-মূল্যবোধসম্পন্ন, আলোকিত, উদার, শক্তিমান ও কার্যকর যারা জাতীয় জীবনের বিভিন্ন অঙ্গনে শক্তিমান নেতৃত্ব দিয়ে এই জাতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তাদের আজ পেতে হবে বিপুল সংখ্যায় সারা দেশে, সবখানে। কেবল এককে দশকে নয়, সহস্রে লক্ষে। আর কেবল সংখ্যায় পেলেই চলবে না, তাদের পেতে হবে একত্রিত ও সমবেতভাবে। তাদের গ্রথিত করতে হবে শক্তিশালী সংঘবদ্ধতায়, উত্থান ঘটাতে হবে জাতীয়শক্তি হিসেবে। সারা দেশের সবখানে এইসব আলোকিত মানুষ গড়ে তোলার পরিবেশ সৃষ্টি করা, জাতীয়শক্তি হিসেবে তাদের সংঘবদ্ধ করা এবং এরই পাশাপাশি জাতীয়চিত্তের সামগ্রিক আলোকায়ন ঘটানো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্যগুলোকে সফল করে তোলার জন্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র গত ৩৯ বছর ধরে দেশব্যাপী নানারকম উৎকর্ষধর্মী কর্মসূচি পরিচালনা করছে। কর্মসূচিগুলো নিম্নরূপ:
'আলোকিত মানুষ চাই' স্লোগানকে লালন করে ১৯৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে 'বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র'। আর এই পীঠস্থানের স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষটি হলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র একাধারে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পরিচালনার জন্য রয়েছে ৯ সদস্যের একটি ট্রাস্টিবোর্ড, যারা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অর্থায়নে রয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বিভিন্ন লোকহিতৈষী ব্যক্তি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং কেন্দ্রের নিজস্ব আয়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের রয়েছে একটি নিজস্ব ১০ তলা একাডেমিক ভবন। এ পর্যন্ত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কার্যক্রম দেশে-বিদেশে নানাভাবে সমাদৃত হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্ব এবং অবদানের জন্য ২০০৮ সালে ইউনেস্কোর (UNESCO) সবচাইতে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার The Jan Amos Comenius Medal for the year লাভ করেছে। কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ২০০৪ সালে পেয়েছেন এশিয়ার নোবেল খ্যাত Magsaysay International Award.
২০১৬ সালে পাঠক সংখ্যা:
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচির লক্ষ্য মানুষের গুণগত সমৃদ্ধি। জাতীয় জীবনের উচ্চায়ত চৈতন্য ও আলোকের পদপাত আমাদের আজ ঘটাতেই হবে যদি একটা বড় দেশ আর বড় জাতিকে আমরা গড়ার কথা ভাবি। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আলোকিত মানুষের স্বপ্ন এমনি এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশেরই জন্যে। বিস্তরিত জানার জন্য ভিজিট করুন--www.bskbd.org